Posts

সুভাষ: জীবনী নয় মহাজীবনী

সুভাষ ছিলেন আমার হিরো। এখন আর নয়। আসলে সুভাষকে প্রতিনিয়ত খাটো হতে দেখতে-দেখতে কবে যেন তিনি আমার চোখে নায়কের আসন থেকে সরে গেছেন। আমি কোনও মহাজীবনের ক্ষেত্রে এটা হতে দেখিনি যে, তাঁরা কত মহৎ তা বোঝানোর জন্য অন্য কাউকে খাটো করা হচ্ছে। সুভাষের ক্ষেত্রেই সেটা হতে দেখেছি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যে কত বড় তা বোঝানোর জন্য অন্যান্য অনেককে প্রতিনিয়িত খাটো করা হয়ে থাকে। এতে উলটে সুভাষকেই খাটো লাগতে শুরু করেছিল আমার। সুভাষ সম্পর্কে একজনের মূল্যায়নই আমার মন টেনেছিল। তিনি হলেন সৈয়দ মুজতবা আলী। কিন্তু আলী সাহেবের লেখাটা যখন পড়েছিলাম, তখন আমার চিন্তার রাজ্যে এতটাই তোলপাড় হয়ে গিয়েছে যে, সুভাষকে ফের নায়কের আসনে বসানোটা আমার পক্ষে কষ্টকর ছিল। সুভাষ এখন আর আমার নায়ক না-হলেও তাঁকে ভুলে যাইনি। তাঁকে কি ভোলা যায় কখনও। তাই তো তাঁকে নিয়ে হিন্দিতে যে ম্যাগনাম ওপাস তৈরির প্রয়াস পাওয়া হয়েছিল, সেলুলয়েডে, তার নাম দেখেই আমি খানিক চমকে গিয়েছিলাম— বোস : দ্য ফরগটেন হিরো। এই নামটা পুরোপুরি আমরা ভাবনার উলটো। সুভাষ বসু আমার নায়কও নন, তবে তিনি আমার কাছে বিস্মৃতও নন। তবু সিনেমাটা দেখেছিলাম। কারণ পরিচালকের নামটা ছিল শ্য

ভোজের উৎসব

Image
ছবি: প্রাণকৃষ্ণ কর উৎসব মানেই ভোজ। কিন্তু, শুধু ভোজই যে উৎসব হয়ে উঠতে পারে, তার সেরা উদাহরণ আমাদের দেশের মকর সংক্রান্তি। পশ্চিমবঙ্গ ও অসম, এই দু জায়গায় এই উৎসবে সামিল হওয়ার পর মনে হয়েছে, অসমের মজাটাই আলাদা। তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে, বা বলতে পারি, কলকাতা ও তার আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে সংক্রান্তি পালন তো লোকে করে, কিন্তু তাতে থাকে না উৎসবের মেজাজ। অসমে ভোগালি বিহু নামে পরিচিত এই উৎসব শুরু হয়ে যায় সংক্রান্তির আগের দিনেই। যাকে বলা হয় উরুকা। শুধু খাওয়া নিয়েই উৎসবমুখর এক পরিবেশ। সারাদিন বাজার থাকে সরগরম। রোজকার বাজারের পাশাপাশি গুয়াহাটি শহরে ঢল নামে অগণন পসারির। সবাই নিয়ে আসে বিহুর অজস্র সম্ভার। তবে, এই বিহুর প্রায় সাতদিন আগে থেকেই শহরের নানা জায়গায় ছোট-ছোট মেলাও বসে। সেই মেলাগুলোতেও বিক্রি হয় বিহুর সম্ভার। কী এই বিহুর সম্ভার ? মেলা হোক বা, রোজকার বাজার, বা অগণন পসারির পসার। সবেতেই থাকে পিঠের উপকরণ। বিহু মানেই পিঠে। নতুন চাল, নতুন গুড়ের পিঠে। অসমে মূলত যে-চাল দিয়ে পিঠে বানানো হয়, সেটাকে বলে বন্নি চাল। আমার মনে হয়ছে, বাংলায় যাকে বিন্নি ধান বলে, অসমে সেটাই মনে হয় বন্নি। আমাকে কেউ-কেউ বলেছেন, বিন্ন

KHOSHBAAG, The Royal Cemetery

Image

Hazarduari Diary by TAPAS PAUL

Image

প্রেমের একদিন প্রতিদিন

Image
  -         প্রেমের জন্য একটি দিন নিয়ে নয়, প্রেমের জন্য এই দিনটি, মানে ভ্যালেন্টাইন্স ডে নিয়ে রয়েছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-দোলাচল ও সংশয়। প্রেমের জন্য একটি দিন তো থাকতেই পারে। অনেকে বলে, প্রেম যদি থাকেই, তাহলে প্রতিদিনই থাকবে, বিশেষ একটা দিনেই কেন থাকবে ? কিন্তু, আমাদের সমস্ত উৎসব-অনুষ্ঠান সম্পর্কেই তো এ কথা বলা যেতে পারে। আমরা তো রোজই ঈশ্বরের আরাধনা করি, তবু বিশেষ-বিশেষ তিথি বা পার্বণেও তো ঈশ্বরের আরাধনাকে উৎসবে আনন্দের পর্যায়ে নিয়ে যাই। পিতা-মাতা-শিক্ষককে আমরা রোজই সম্মান করি (মাঝে-মাঝে কোনও কারণে তাঁদের সঙ্গে বিবাদ-বচসা হলেও), তবুও কেন গুরুপূর্ণিমায় শিক্ষকদের বা বিজয়ায় বাবা-মাকে প্রণাম করার বিশেষ রেওয়াজ প্রচলিত। তাই প্রেম প্রতিদিন থাকলেও তার জন্য একটা বিশেষ দিন পালন করাই যায়। কিন্তু আমার প্রশ্ন এই দিনটি নিয়ে। এই দিনটিকে কেন্দ্র করে উদারবাদী ও রক্ষণশীলতার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে আমাদের দেশে সেই গত শতাব্দির নব্বইয়ের দশক থেকে। এই দিনটির সপক্ষে থাকা উদারবাদীরা দুই প্রকারের। এঁদের মধ্যে একদল মানসিক দিক দিয়ে উদার। তাঁদের মতে, ভারতে এই দিনটি পালন করার বিষয়টি বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও এ নিয়ে

GREAT BOYS STOP WARS

It is the 50TH year of Independent Bangladesh. On this occasion, an article by Tanvir Mokammel published in 'Anandabazar Patrika'. While reading this write-up I remembered a boy whom I saw in my childhood. In our school, he was two classes below me. He came wearing a T-shirt at one of our school events. I stared at the graffiti on his T-shirt for a long time. There are two reasons to be surprised. One, Graffiti on T-shirt was written in Bengali. This is not surprising nowadays, but when we were in school, we could not see Bengali writing on T-shirts. Two, the T-shirt read: The Great Boys go to war. As a child, I knew that those who do good things like studying, listening to their parents and elders, etc., are good boys. But I didn't know what 'Great boy' was. I knew what war was. Courtesy of Rama-Ravana War or Kurukshetra War. But I didn't know that boys who go to war can be not only good but also Great. But at that time again in walls of different places of the

লেননের চিরনিদ্রার চল্লিশ বছর

ঘুম থেকে উঠে জানতে পারলাম, চল্লিশ বছর পার হয়ে গেল লেননের চিরনিদ্রার। আমারও জন্মের আগের কিংবদন্তি এই সংগীত শিল্পীর গানের সঙ্গে আমার পরিচয় বছর কুড়ি আগে। আসলে অঞ্জন দত্ত, সুমনের চাটুজ্যের গানের ভেলায় ভেসেই তো লেনন-ম্যাককার্টনি, বিটলস, পিঙ্ক ফ্লয়েড, বব ডিলানের গানদরিয়ায় গিয়ে পড়েছিলাম। আজ আবার এসব কথা মনে পড়তেই ভাবতে বসলাম, ষাট-সত্তরের দশকেই পাশ্চাত্যে যে সুরের ধারা বইতে শুরু করেছিল, তা বাংলার তীরে এসে পৌঁছতে প্রায় বছর কুড়ি লেগে গেল কেন? হয়তো বাংলা গানের শ্রোতা তৈরি ছিলেন না। তা নাহলে মহীনের ঘোড়াগুলি রেস শুরু করতে না-করতেই থেমে গেল কেন? পরে নব্বইয়ের দশকে অঞ্জন-সুমন বাংলা গানে যখন তারুণ্যের জোয়ার আনলেন, তখন তাঁরা কিন্তু নিজেই মাঝবয়েসি। শিল্পী ও শ্রোতাকে তৈরি হতে-হতে দুই দশক লেগে গেলেও আশার কথা এই যে, অঞ্জন-সুমন-নচিকেতা-শিলাজিতের আগমনের ফলেই নতুন সহস্রাব্দ শুরু হতে-হতে বাংলা গানের জগতে হল ব্যান্ড গানের বিরাট বিস্ফোরণ, তারই বছর দশেক পর অনুপমের আগমন। এইভাবেই গানের ধারা দেশ থেকে দেশ, সময় থেকে সময়ে বয়ে চলেছে নিরবধি। তাই তো আজও আমরা শুনে চলেছি লেনন-ম্যাককার্টনি, বিটলস, পিঙ্ক ফ্লয়েড, বব ডিলান